RMG

বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে পোশাক শিল্পে

নিউজ

বাংলাদেশের অধিকাংশ তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানা সক্ষমতার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম কার্যাদেশ পাচ্ছে। যার কারণ হচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকায় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে মূল্যস্ফীতির হার। এর ধাক্কায় এ দুই বাজারের ক্রেতারা নতুন পোশাক ও ফ্যাশন সামগ্রী কেনা কমিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার, ইউরোপ আমেরিকা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মূল্যস্ফীতিতে পড়েছে। এতে এসব দেশে পোশাকের চাহিদা কমে গেছে। আর এর সঙ্গে ক্রয়াদেশ কমতে শুরু করেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৩ সালটা রপ্তানি খাতের জন্য ভালো যাবে না।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই যেকোন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকা। আর এই মহাদেশের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি চরমে উঠেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরে মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। দেশটিতে গত জুনে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক এক শতাংশ। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, কানাডাতেও মূল্যস্ফীতি চরমে উঠেছে। দেশটিতে চলতি বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক এক শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মে মাসে মূল্যস্ফীতির এই হার ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ১৯৮৩ সালের পর এটাই কানাডার মূল্যস্ফীতিতে বড় ঊর্ধ্বগতি।

একইভাবে ইউরোপেও মূল্যস্ফীতি কয়েক দশকের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি যুক্তরাজ্যে ৯ দশমিক এক শতাংশ, জার্মানিতে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, রাশিয়াতে ১৭ দশমিক এক শতাংশ, তুরস্কে ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এই মূল্যস্ফীতি বাড়ার কারণে দেশগুলোতে পোশাকের চাহিদা কমছে। অর্থাৎ সেখানকার মানুষ খরচ কমানোর জন্য পোশাক কম কিনছে।

অথচ মাত্র কয়েক মাস আগেও পরস্থিতি ছিল একেবারে উল্টো। ওই সময় বিপুল কার্যাদেশ পাচ্ছিল দেশের পোশাক কারখানাগুলো।

করোনা মহামারির পর পুনরুদ্ধারে সময় লাগার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ দিকে সেই শঙ্কা উড়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, আশঙ্কার জায়গায় দেখা দেয় আশা।

মহামারিকালে এইচঅ্যান্ডএম ছাড়া বাকি প্রায় সব ব্র্যান্ডই ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের কার্যাদেশ বাতিল করে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তৈরি পোশাক খাত। প্রতিটি বড় শিল্পই মন্দার মুখে পড়ে। এ সময় বস্ত্র রপ্তানি ৩৪.১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৭.৯৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

চাহিদা কমে যাওয়া ছাড়াও ফ্রেইট খরচ প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়, আর অন্যান্য উপকরণের সাথে কাঁচামালের দামও বেড়ে যায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।

কিন্তু এ অর্থবছরে তৈরি পোশাক শিল্প শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয় ৪২.৬১ বিলিয়ন ডলার। যা আগের সর্বোচ্চ আয়ের চেয়েও প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বেশি।

শেয়ার করুন