একক মালিকানাধীন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জন্য আগামী দিনগুলো চ্যালেঞ্জিং

ইন্টারভিউ

১০০ বিলিয়ন ২০৩০ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এ লক্ষ্যে মাত্রা অর্জন খুবই কঠিন কাজ। কারন‌ আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো ও বসে নেই। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পে এখন‌ও দক্ষ জনশক্তি নেই, প্রয়োজন ৮৫ লক্ষ দক্ষ নিম্ন লেভেলের শ্রমিক, উচ্চ লেভেল মধ্যম লেভেল বাদ দিলাম।

এ শিল্প নানা ধরনের ব্যাংক, বনড, ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল। এ যাবত ৫০ বিলিয়ন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। তাতেই ব্যাংক বনড হিমসিম খাচ্ছে। ১০০ বিলিয়ন ডলারের জন্য কত আর্থিক সহায়তা দরকার, তা কি দেয়া সম্ভব হবে এবং যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন ও করে যাচ্ছেন আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের মালিকরা সে তুলনায় মূল্য পাচ্ছে না। আবার ক্রেতারা আতীতেও সেই মূল্য দেননি এবং ভবিষ্যতে কি দিবে তার নিশ্চয়তা কি?

কিন্তু আমাদের আশা, গার্মেন্টস শিল্পের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা এখন অনেক মেধাবী। সরকারও এ শিল্পের প্রতি অনেক ছাড় দিতে প্রস্তুত। কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জ আছে আমি মনে করি।

ধরে নিমাল সব চ্যালেঞ্জ জয় করলেন, কিন্তু আমাদের মালিক ভাইদের নতুন প্রজন্মের সন্তানদের যেমন সুশিক্ষিত করেছেন, তেমনি সুন্দর ভাবে পরিচালনা করেছেন। কিন্তু আমাদের দিন শেষে লাগবে দক্ষ হাতের ছোঁয়া।

এখন আমাদের শ্রমিক ভাইদের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরাও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গেছে এবং হচ্ছে। তারা তো সুইং অপারেটর বা হেল্পার হবার জন্য লেখা পড়া করেনি। তাহলে আগামী দিনে আমাদের আরও একটি ধাক্কা আছে। সেটা হলো শ্রমিক এর বিশাল ঘাঁটতি হতে যাচ্ছে এটি নিঃসন্দেহে বলা যায়।

এখন‌ যদি ধরে নেই শিক্ষিত ছেলে মেয়েরাই বা টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সেই জায়গায় আস্তে আস্তে আনতেই হবে, তাহলে তাদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন এবং উচ্চ বেতন স্কেল দিয়ে কাজ করাতে হবে। যা একক মালিকানা বা শুধু গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে আছে তাদের জন্য খুবই কঠিন কাজ হবে।

এখন বুদ্ধিমানের কাজ হল একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে সরে এসে, বিদেশি বায়ারদের সাথে প্রত্যেক ফ্যাক্টরি শেয়ার হোল্ডার মার্কেটিং পার্টনার হিসেবে নিয়ে নেওয়া উচিৎ। এতে করে তাদের আর্থিক ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। চায়না, কোরিয়া, জাপান এর সাথে মুক্ত বানিজ্য বাড়াতে হবে। তাদের সাথে টেকনোলজি এবং মার্কেটিং পার্টনার হিসেবে নিতে হবে খুব দ্রুত। না হলে তারা নিজেরাই তা কার্যকর করবে।

যা হয়তো আমাদের কর্ম সংস্থান বৃদ্ধি করবে। কিন্তু আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের যেসব ব্যক্তি মালিকায় প্রতিষ্ঠান শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন তাদের জন্য খুবই নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট পরতে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বোচ্চ এক্সপোর্টের রেকর্ড বাংলাদেশে এক কোরিয়ান কোম্পানি অর্জন করেছে, বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পরেনি।

লক্ষ্য করে দেখুন, যে সকল প্রতিষ্ঠান JV/FDI তাদের কোন সমস্যা নেই। আমাদের আগামীতে গার্মেন্টসে সেক্টরে একটি বিশাল শ্রমিক ঘাটতি দেখা দেব যদি আমরা খুব গভীর ভাবে চিন্তা করি। তাই এটাকে হালকা করে ভাবার কোন অবকাশ নেই। এর একটি সুন্দর পথ বের করতে হবে সংগঠনের নেতাদের।

১০০ বিলিয়ন ডলারের স্বপ্ন পূরণ হোক, আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের অনেকেই বিভিন্ন সেক্টরে সফলতা অর্জন করেছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু যারা শুধু গার্মেন্ট শিল্পের সাথে জড়িত আছে তাদের উদ্দেশ্য করে বললাম।

সালাউদ্দিন/হেড অফ অপারেশন/বুনন

শেয়ার করুন