বাংলাদেশের ৪র্থ জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল মসলিন। এর আগে প্রথম বাংলাদেশের জি আই পণ্যের হিসেবে ২০১৬ সালে জামদানিকে জি আই পন্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
ভৌগোলিক নির্দেশক (Geographical indication সংক্ষেপে GI জি আই) হচ্ছে কোনো সামগ্ৰীর ব্যবহার করা বিশেষ নাম বা চিহ্ন। এই নাম বা চিহ্ন নিৰ্দিষ্ট সামগ্ৰীর ভৌগোলিক অবস্থিতি বা উৎস (যেমন একটি দেশ, অঞ্চল বা শহর) অনুসারে নিৰ্ধারণ করা হয়। ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট গুণগত মানদণ্ড বা নিৰ্দিষ্ট প্ৰস্তুত প্ৰণালী অথবা বিশেষত্ব নিশ্চিত করে। ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিভিন্ন সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট অঞ্চলটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা প্ৰদান করে।
জি আই ( G.I) হলো জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন Geographical indication বা ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য। জি আই একটা নির্দিষ্ট সাইন যা একটা নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং যা কোন নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার পরিচয় বহন করে। এতে পণ্যটি ঐ দেশের পরিচয় হিসেবে কাজ করে এবং নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকাটি ঐ পণ্যের জন্য খ্যাতি পেয়ে থাকে। কোন একটি নির্দিষ্ট পণ্য যখন ঐতিহ্যবাহী হয় তখন এটি সেই দেশের জন্য বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নিতে পারে যার জন্য পণ্যটিকে আন্তর্জাতিকভাবে একটি স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড প্যাটেন্ট দেওয়া হয়। এটাকেই ব্যবসা বাণিজ্যের ভাষায় আন্তর্জাতিকভাবে জি আই পণ্য বলা হয়।
WIPO( World Intellectual Property Organization) হচ্ছে জি আই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান। কোন দেশের জি আই পণ্যের স্বীকৃতির জন্য সে দেশের ডিপিডিটি আবেদন করে থাকে। কোন একটি দেশের মাটি,পানি,আবহাওয়া এবং জনগোষ্ঠী যদি কোন একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে থাকে তাহলে সেটিকে ঐ দেশের ভৌগলিক কিংবা জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে এমন অনেক ঐতিহ্যগত পণ্য রয়েছে যা সঠিক উদ্যেগের অভাবে জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। সরকারের এই ব্যপারে উদ্যেগ গ্রহোনের জন্য ২০১৪ সালে প্রথম বাংলাদেশের জি আই পণ্যের জন্য আবেদন করে এবং তার প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে জামদানি জি আই পন্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে থাকে। তারপর একে একে ইলিশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আম ও সবশেষে মসলিন জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
জি আই পণ্যের জন্য যে সুবিধাগুলো হচ্ছে: সংশ্লিষ্ট জি আই পণ্যের মালিক হবে সেই দেশ এবং ভৌগলিক পরিচিতি ও পাবে সেই দেশ। সেই দেশ এই পণ্যের সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীক মুনাফার মালিক হবেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই পণ্যের সত্ত্ব অন্য কোন দেশ দাবি করতে পারবেনা।
বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায় জামদানি ১৭ নভেম্বর ২০১৬ দ্বিতীয় পণ্য হিসেবে ইলিসজ ৬ আগস্ট ২০১৭ জি আই পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত হয়। ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে ক্ষীরষাপাতি আমকে বাংলাদেশের ৩য় জি আই পণ্য স্বীকৃতি পায় এবং সবশেষে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মসলিনকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বসন টিভি/জিআই পণ্য/মসলিন