বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর (২০১৩ সালের সংশোধনীসহ) প্রথম অধ্যায়ের ২য় ধারায় ৬৫ অনুচ্ছেদের সংজ্ঞা অনুযায়ি, শ্রমিক অর্থ শিক্ষাধীন সহ কোন ব্যক্তি, তাহার চাকুরীর শর্তাবলী প্রকাশ্য বা উহ্য যে ভাবেই থাকুক না কেন, যিনি কোনো প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরিভাবে বা কোন ঠিকাদার, যে নামেই অভিহিত হইক না কেন, এর মাধ্যমে মজুরী বা অর্থের বিনিময়ে কোন দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরী, ব্যবসা উন্নয়ন অথবা কেরানীগিরির কাজ করার জন্য নিযুক্ত হন, কিন্তু প্রধানতঃ প্রশাসনিক, তদারকি কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবেন না।
তাহলে, কোনো প্রতিষ্ঠানে মজুরীর ভিত্তিতে আপনি “এমপ্লয়েড” হলে আপনি শ্রমিক, যদি না আপনার চাকুরীটি তদারকিমূলক (ম্যানেজেরিয়াল), প্রশাসনিক (এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ) কিংবা ব্যবস্থাপনামূলক হয়ে থাকে।
এখন তদারকি কর্মকর্তা এবং প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কারা? শ্রম আইন ২০০৬ ও এর ২০১৩ সালের সংশোধনীতে এর উত্তর পাওয়া যায়না। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ শ্রম বিধিতে (প্রথম অধ্যায়, ২ ধারার উপধারা ১ -এ “ছ” ও “ঞ” অনুচ্ছেদ) এই দুই শ্রেনীর সংজ্ঞা দেয়া আছে।
“তদারকি কর্মকর্তা” অর্থ মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত এমন কোনো ব্যক্তি যিনি উক্ত ক্ষমতাবলে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের কোন শাখার কোনো কাজের বা সেবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন, কাজের পরিধি নিয়ন্ত্রন, বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন, কাজের মূল্যায়ন বা পর্যালোচনা, শ্রমিকের দিক নির্দেশনা প্রদান বা তদারকি করেন।
এবং “প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি” অর্থ মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি যিনি উক্ত ক্ষমতাবলে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক বা কর্মচারীদের নিয়োগ, বেতন ও ভাতাদি নির্ধারন, চাকরীর অবসান বা চাকুরী হইতে অপসারন, চুড়ান্ত পাওনাদি পরিশোধ এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় অনুমোদন বা নিয়ন্ত্রন কাজে নিয়োজিত।
সুতরাং, বলা যেতে পারে, আগে আমরা মোটা দাগে একটি কারখানায় বা প্রতিষ্ঠানে দুইটি শ্রেনীবিভাজন দেখতাম – মালিক ও শ্রমিক। কিন্তু ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখের পর থেকে শ্রেনীবিভাজন হবে চারটি – মালিক, প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, তদারকি কর্মকর্তা ও শ্রমিক।
কিন্তু কোনো ভাবেই “প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি” এবং “তদারকি কর্মকর্তা”-দের মালিক-শ্রেনীভূক্ত করার সুযোগ নেই।
মালিক হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের মালিক (Owner) এবং বাকি তিন শ্রেনী হচ্ছে কর্মী (Employee অর্থাৎ Employed Person)।
1 thought on “শ্রমিক কারা?”
Comments are closed.